আপনার গলায় কাশি হয়েছে, তাহলে আপনি কাশির সিরাপ অথবা কাশির ট্যাবলেট সেবন করে কাশি সারাতে পারেন। কাশি হলে আপনি বিভিন্ন উপায়ে কাশি নির্মূল করতে পারেন। বর্তমানে কাশি দূর করার ঘরোয়া উপায় রয়েছে,
তবে আপনি যদি কোন ধরনের উপায় ছাড়াই কাশি দূর করতে চান তাহলে কাশির ট্যাবলেট বা সিরাপ সেবন করতে হবে। আর এজন্য আপনাদের অবশ্যই সেরা কাশির ওষুধ সম্পর্কে অবগত হতে হবে। তাই আমরা আজকের পুরো আর্টিকেলটিতে সেরা ১২টি কাশির ট্যাবলেট এর নাম আলোচনা করব।
কাশির ট্যাবলেট এর নাম
কাশি দূর করার জন্য অবশ্যই সকলকে কাশি দূর করার সঠিক ট্যাবলেট গুলো সম্পর্কে জানতে হবে। জানার সুবিধার্থে আমরা এখন কাশির ট্যাবলেট এর নাম গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করব।আপনাদের যদি কাশি হয়ে থাকে তাহলে কিছু ওষুধ গ্রহণের মাধ্যমে কাশি নিরাময় করতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ মালটিভিট প্লাস খেলে কি মোটা হয়
আরো পড়ুনঃ কোন ব্র্যান্ডের গুড়া দুধ ভালো
তাছাড়া ও আপনাদের বাচ্চাদের যদি সর্দি কাশি লেগে থাকে তাহলে কিছু ওষুধ দেওয়ার মাধ্যমে তাদের সর্দি কাশি নিরাময় করতে পারেন। তবে চলুন এবার কাশি ট্যাবলেটের নাম গুলো জেনে আসি।
- Brolyt 3mg
- Askorel SR 50mg
- এমব্রোক্স ৭৫ মি.গ্রা.
- Fexo 120
- সিনাকফ (Sinakof)
- Klarix
- Keto A
- Sendo 5mg
- Prenoxid 200Mg
- Monas 10
- Encilor 10mg
উপরোক্ত কাশি ট্যাবলেট গুলো সেবন করলে কাশি দ্রুত সেরে যাবে। তবে আপনাদের অবশ্যই ট্যাবলেট গুলো একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সেবন করতে হবে। অথবা আপনি চাইলে ফার্মাসিস্ট এর নিকট পরামর্শ নিয়েও কাশির সিরাপ বা ওষুধ গুলো খেতে পারেন। সঠিক নিয়মে কাশির ট্যাবলেট খেলে দ্রুত কাশি নির্মূল করা যায়।
স্কয়ার কোম্পানির কাশির ঔষধের নাম
আপনারা অনেকেই স্কয়ার কোম্পানির কাশির ওষুধের নাম সম্পর্কে জানতে চান। এজন্য আমরা এখন স্কয়ার কোম্পানির কাশির ঔষধের নামগুলো সম্পর্কে আলোচনা করব। আমরা সকলেই জানি স্কয়ার কোম্পানির ওষুধ গুলো সচরাচর ভালো হয়ে থাকে। এজন্য আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্কয়ার কোম্পানির ওষুধ গুলো খুজে থাকি। নিম্নে ট্যাবলেটের নাম গুলো তুলে ধরা হলোঃ
- অ্যাক্সোডিন ১৮০
- Encilor ১০মিলিগ্রাম
- অ্যামব্রক্স
- কেটো এ ১০০
- ফেক্সো ১২০
- ক্লারিক্স
উপরোক্ত কাশির ট্যাবলেট গুলো স্কয়ার কোম্পানি উৎপাদন করেছে। আপনি এই ট্যাবলেট গুলো যে কোন ফার্মেসির দোকানে পেয়ে যাবেন।
কাশি কেন হয় ও কাশি হওয়ার কারণ
কাশি সাধারণত বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। ধুলাবালি ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকলে কাশি হয়ে থাকে। তাছাড়াও কাশি হওয়ার আরো কারণ রয়েছে যেগুলো জানলে আপনারা সতর্ক হতে পারবেন। তাই সকলেই কাশি হওয়ার কারণগুলো জানুন এবং সঠিক নিয়মে ওষুধ সেবন করে সুস্থ থাকুন। কাশি হওয়ার কারণগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ
- অতিরিক্ত গরম লাগার কারণে কাশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- তাছাড়া ভাইরাস সংক্রমণ হওয়ার কারণে কাশি হয়ে থাকে।
- ঋতু পরিবর্তনের সময় অথবা শীতকালে ঠান্ডা লেগে কাশি হয়ে থাকে।
- গরমের সময়ে গা ঘেমে জ্বরের সাথে সাথে কাশি হতে পারে।
- এছাড়াও গরমের সময় ঘামা শরীরে গোসল করলে জ্বর ও কাশি হয়ে থাকে।
- শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা ও ফ্লু হয়ে থাকলে কাশি হয়।
- তামাক দব্য সেবন ও অতিরিক্ত ধূমপান করার কারণে কাশি হয়ে থাকে।
- যাদের নিউমোনিয়া রোগ রয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও কাশি হতে দেখা যায়।
- ফুসফুসে ক্যান্সার থাকলে কাশি হতে থাকে।
- তাছাড়াও বায়ু দূষণ যুক্ত এলাকায় বসবাস করলে কাশি হওয়া সম্ভাবনা রয়েছে।
উপরোক্ত কারণে কাশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই কারণগুলো জেনে সুস্থ ভাবে জীবন যাপন করার চেষ্টা করুন।
কাশির সিরাপ এর নাম – দাম
আপনারা যারা কাশির ট্যাবলেট খেতে পারেন না তাদের জন্য রয়েছে কাশির সিরাপ। কাশির সিরাপ খাওয়ার ফলে কাশি দূর করতে পারবেন। এই সিরাপ গুলো ছোট বড় সকল বয়সি ব্যক্তিরা খেতে পারবেন। নিম্নে কাশি সিরাপের নাম ও দাম আলোচনা করা হলোঃ
এডোভাস সিরাপঃ কাশির সিরাপ হিসেবে এই সিরাপটি অন্যতম এবং জনপ্রিয়। এডোভাস সিরাপটি স্কয়ার কোম্পানি তৈরি করেছে। এই সিরাপটি কাশি দূর করার ক্ষেত্রে বেশ কার্যকরী। এডোভাস সিরাপ সম্পূর্ণ ভেষজ প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদন করা হয়েছে।
তাই এই সিরাপটিকে ভালো মানের কাশির সিরাপ বলা হয়ে থাকে। এই সিরাপের ১০০ মিলির দাম ৭০ টাকা এবং ২০০ মিলি বোতলের সিরাপ এর দাম ১১০ টাকা।
তুসকা প্লাস সিরাপঃ এই সিরাপটি কাশির ঔষধ হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে স্কয়ার কোম্পানি তুষ্কা প্লাস সিরাপ তৈরি করেছে। উক্ত সিরাপটি ছোট বড় সকল বয়সে মানুষ খেতে পারবে। এই সিরাপ গ্রহণ করার ফলে গলা ব্যথা , শুষ্ক কাশি , কফ জমা ইত্যাদি নিরাময় করা যায়। তুসকা প্লাস সিরাপটির বর্তমান বাজার মূল্য ৮৫ টাকা।
পিউরিসাল সিরাপঃ কাশি দূর করতে পিওরিসাল সিরাপ খুবই কার্যকরী। ছোট বড় যে কোন বয়সে খাওয়া যাবে এই সিরাপটি। তবে গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে এই সিরাপ গ্রহণ করা যাবে না। এই সিরাপটির কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই , কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে ব্যক্তিদের জন্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। পিউরিসাল সিরাপটির বাজার মূল্য ৩০ টাকা এবং ৪৫ মিলি বোতলের সিরাপের দাম ৫০ টাকা।
টমিফেন সিরাপঃ তীব্র কাশী ও শুষ্ক কাশি যাদের হয়ে থাকে তাদের জন্য এই টমিফেন সিরাপটি ভালো কাজ করে থাকে। শুষ্ক কাশি হয়ে থাকলে উক্ত সিরাপটি খেতে পারেন। এই সিরাপ গ্রহণ করার ফলে তীব্র কাশি দূর হয়ে যায় এবং বুকে কফ জমে থাকলে তা নিরাময় করা যায়।
সিরাপের কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে , যেমনঃ বমি বমি ভাব হতে পারে , মাথা ঝিমঝিম করতে পারে ইত্যাদি সমস্যা গুলো হয়ে থাকতে পারে। এজন্য এই সিরাপটি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে গ্রহণ করা উচিত। উক্ত সিরাপটির বাজার মূল্য ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে রয়েছে।
এডোলিফ সিরাপঃ তাছাড়া বড় ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে কাশি নিরাময় করার জন্য এই সিরাপটি অধিক ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই সিরাপটি আপনার বুকে জমে থাকা কফ অপসারণ করবে এবং তীব্র কাশি দূর করতে সাহায্য করে থাকে। সিরাপটির 100 মিলির দাম পড়বে ৬৫ টাকা এবং ২০০ মিলি বোতলের সিরাপের দাম ১০৫ টাকা।
উক্ত কাশির সিরাপগুলো আপনারা খেতে পারেন। কাশির সিরাপ গুলো খাওয়ার আগে অবশ্যই আপনাদের কাশি হওয়ার ধরন অনুযায়ী নিয়ম মেনে গ্রহণ করতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় ডাক্তারের নিকট গিয়ে পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাওয়া।
শুকনো কাশির সিরাপের নাম
শুকনো কাশি হয়ে থাকলে আপনারা উক্ত সিরাপ গুলো খেতে পারবেন। শুকনো কাশি খুবই বিরক্তকর একটি কাশী যা সবাই এই কাশি দ্রুত দূর করতে চায়। তবে আপনারা কিছু সিরাপ সেবনের মাধ্যমে শুকনো কাশি নিরাময় করতে পারবেন। নিচে শুকনো কাশি সিরাপের নাম তুলে ধরা হলোঃ
- মধুবাস
- নেক্টার(Nectar)
- ওকোফ
- Alkof Syrup (Ibn Sina)
- অ্যাবেক্স
- Benadryl Dry Cough Syrup
- Unison Tussistin
- Corex-D Syrup (Prescription Required)
উপরোক্ত সিরাপ গুলো শুকনো কাশি হলে সেবন করতে পারেন। তবে সিরাপ গুলো সেবন করার পূর্বে একজন রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।
শুকনো কাশির ট্যাবলেট এর নাম
আপনাদের মধ্যে অনেকের শুকনো কাশি হয়ে থাকে। ফলে আপনারা শুকনো কাশির ট্যাবলেটের নাম জানতে গুগলে সার্চ করে থাকেন। আপনারা যারা শুকনো কাশিতে ভুগছেন তারা এই ওষুধগুলো গ্রহণের মাধ্যমে শুকনো কাশি দূর করতে পারবেন। কারন আমরা নিম্নে শুকনো কাশি ট্যাবলেট গুলোর নাম আলোচনা করব। শুকনো কাশির ট্যাবলেটঃ
- Ketifen
- Totifen
- Alarid
- Prosma
- Fenat
- Toti
- Ocof
- মোনাস ১০ ট্যাবলেট
- Nectar
- Ketomar
- Tofen
আপনারা চাইলে শুকনো কাশি ট্যাবলেট হিসেবে উপরের ওষুধ গুলো খেতে পারেন। তবে মনে রাখবেন আপনি নিজে নিজে ওই ওষুধগুলো কিনে খাবেন না। প্রথমে শুকনো কাশি হয়ে থাকলে ডাক্তারের নিকট গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করুন এবং ডাক্তার আপনার জন্য ভালো শুকনো কাশির ওষুধের নাম বলে দিবে।
কাশি দূর করার ঘরোয়া উপায়
যদি আপনি কাশির ওষুধ সেবন না করতে চান সে ক্ষেত্রে কাশি দূর করার ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করে কাশি দূর করতে পারেন। ওষুধ খাওয়া ছাড়াও কাশি দূর করা যায়, আর এই উপায় আপনি প্রাকৃতিকভাবে বিভিন্ন উপায় অনুসরণ করে কাশি নির্মূল করতে পারবেন। নিম্নে কাশি দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো উল্লেখ করা হলোঃ
- আমরা সকলে জানি তুলসী পাতা সকল রোগের প্রাকৃতিক ওষুধ হিসাবে কাজ করে। তেমনি ভাবে কাশি দূর করতে তুলসী পাতা ব্যবহার করতে পারেন। তুলসী পাতা বেটে রস করে তার সাথে দুই চামচ মধু মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার খেলে কাশি দূর হয়ে যাবে।
- তাছাড়াও কাশি কমাতে চাইলে বা কাশি দূর করতে চাইলে প্রতিদিন রাতে গরম দুধের সাথে দুই চামচ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে করে আপনার কাশি ভালো হয়ে যাবে। আর যদি গরম দুধ না থাকে তাহলে হালকা গরম পানির সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
- আপনার অনেকেই বাসক পাতা সম্পর্কে জানেন। এই বাসক পাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে সিদ্ধ করতে হয়। বাসক পাতা পানিতে সিদ্ধ করে উক্ত সিদ্ধ পানি হালকা গরম থাকা অবস্থায় খেলে কাশি সেরে যায়।
- আপনারা যদি শুষ্ক কাশি দূর করতে চান অর্থাৎ খুশখুসে কাশি দূর করার জন্য লবঙ্গ খেতে পারেন। মুখের মধ্যে দুই থেকে একটি লবঙ্গ নিয়ে দাঁত দিয়ে চিবিয়ে রাখুন। মাঝে মাঝে দাঁত দিয়ে লবঙ্গ চিবিয়ে রস খেয়ে ফেলুন। এভাবে দুই একদিন খেলে কাশি দূর হয়ে যাবে।
- এছাড়াও আপনারা ঘরোয়া উপায় হিসেবে আদার রস খেতে পারেন। আদা রস করে গ্রহণ করুন তাহলে আপনার ফুসফুসে কাশি নিরাময় হয়ে যাবে।
- আবার আদা চা খাওয়ার মাধ্যমে কাশি দূর করা যায়। আপনারা চায়ের সাথে সামান্য পরিমাণ আদা মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে করে আপনার কাশি অনেকটা কমে যাবে।
- আপনি কাশি দূর করার জন্য গরু দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি কাশি দূর করার ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী। হালকা কুসুম গরম গরুর দুধের সাথে 2 চামচ হলুদ মিশিয়ে প্রতিদিন রাতে খাবেন। তাহলে আপনার কাশি ভালো হয়ে যাবে।
কাশির ওষুধ খাওয়ার নিয়ম
কাশির ওষুধ খাওয়ার তেমন নিয়ম নেই। তবে সবচেয়ে ভালো হয় খাবার খাওয়ার পর ওষুধ খাওয়া। সেজন্য আপনারা খাবার খাওয়ার পরে কাশির ওষুধ খাবেন। তবে আপনি যে কোম্পানি কাশির ওষুধ খাবেন সেই ঔষধের প্যাকেটে খাওয়ার নিয়ম লেখা থাকে।
সেই নিয়ম গুলো ভালোভাবে পড়ে নিবেন। আর যদি কাশির সিরাপ খেতে চান তাহলে অবশ্যই প্রতিদিন সকাল , বিকাল, রাত এক চামচ করে খেতে পারেন। তাছাড়া আপনারা ফার্মেসির দোকান থেকেও কাশির ওষুধ কেনার সময় কাশির ওষুধ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিতে পারবেন।
লেখকের মন্তব্য
আজকের সম্পূর্ণ আর্টিকেলে কাশির ট্যাবলেট এর নাম বাংলাদেশ সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি। যাদের অতিরিক্ত পরিমাণে কাশি হয়েছে তারা তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের কাছে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করুন। বিশেষ করে যাদের শুকনো কাশি রয়েছে তাদের অবশ্যই ডাক্তারের কাছে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়া উচিত। কারণ শুকনো কাশিতে অনেক কষ্ট হয়ে থাকে, এছাড়াও শুকনো কাশি থাকার কারণে আরও অনেক ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।