মশার কয়েল তৈরির উপাদান কি কি ২০২৪

প্রিয় বন্ধুরা আপনারা কি মশার কয়েল তৈরির উপাদান সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে একদম সঠিক জায়গাতে এসেছেন। কারণ আমরা আজকের এই পোস্টটিতে মশার কয়েল তৈরির উপাদান গুলোর নাম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাছাড়াও মশার কয়েল কি কি উপাদান দিয়ে তৈরি হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।
মশার কয়েল তৈরির উপাদান
মশার কয়েল তৈরির উপাদান
পোস্টসূচিপত্রঃআমাদের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়লে আপনি জানতে পারবেন মশার কয়েল তৈরির উপাদান এবং মশার কয়েল সম্পর্কিত সকল কিছু বিস্তারিত জানতে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকুন।

উপস্থাপনা | মশার কয়েল কি

প্রিয় বন্ধুরা আপনারা কি জানেন মশার কয়েল কি। আমার অসাধারণ মশার কামড় থেকে বাঁচার জন্য অর্থাৎ মশা তাড়ানোর জন্য যে কয়েল ব্যবহার করি তাকে মশার কয়েল বলা হয়ে থাকে। মশার কয়েল দিয়ে মশা তাড়ানো হয়। মশার কয়েলে আগুন ধরালে একপ্রকার ধোঁয়া বের হয় যা মূলত বিভিন্ন ধরনের উপাদান দিয়ে তৈরি হয়। এই ধোয়া মশাকে তাড়াতে ও মশাকে নিধন করতে সাহায্য করে। আপনি যতক্ষণ কয়েল ব্যবহার করবেন ততক্ষণ মশা আপনার ধারে কাছে দেখা যাবে না।
কয়েলটি যদি ফুরিয়ে অথবা নিভে যায় তাহলে দেবেন মশা আবার ফিরে আসছে আপনার কাছে কামড়ানোর জন্য। তাই সবসময় মশার কয়েল ব্যবহার করুন ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে হলে মশার কয়েল ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর অবশ্যই ভালো মানের মশার কয়েল ব্যবহার করা উচিত। তাহলে বুঝতে পারছেন মশার কয়েল কাকে বলে? কেন এটি ব্যবহার করা হয়। তবে আপনারা যদি মশার কয়েল তৈরি করতে চান তাহলে আজকের পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কারণ আজকের পোস্টে মশার কয়েল তৈরির উপাদান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

মশার কয়েল খেলে কি মানুষ মারা যায়

আপনারা অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন মশার কয়েল খেলে কি মানুষ মারা যায়, আপনাদের এই প্রশ্নের উত্তরে এখন বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনারা হয়তো জানেন মশার কয়েল বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ নিয়ে তৈরি করা হয়। যার ফলে মশার কয়েল পোড়ানোর ফলে সেখান থেকে ধোঁয়া নির্গত হয়ে মশা তাড়িয়ে থাকে,
আবার অনেক সময় মশা মারা পর্যন্ত যায়। মশার কয়েল তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষতিকর কিছু রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয় যার কারণে এটি মানবদেহে ক্ষতি করতে পারে। এধনের রাসায়নিক পদার্থ মানবদেহে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
যার কারণে শরীরের স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যেতে পারে আবার অনেক সময় মানুষ পর্যন্ত মারা যেতে পারে। তাই মশার কয়েল কখনোই খাওয়া উচিত নয়, এটি শরীরের বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। যার কারণে মশার কয়েল খেলে মানুষ পর্যন্ত মারা যেতে পারে। নিম্নে মশার কয়েল তৈরির উপাদান গুলো সম্পর্কে তুলে ধরা হলোঃ

মশার কয়েল তৈরির উপাদান

আপনার হয়তো অনেকেই জানেন বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরের সমস্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। আর সাধারণত ডেঙ্গু মশার কামড়ে ডেঙ্গুজর হয়ে থাকে। আর এই কারণে মশার কয়েলের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। আপনি যদি ভালো মানের কয়েল তৈরি করতে পারেন তাহলে অবশ্যই সেটি বিক্রি করে বা ব্যবসা করে ভালো পরিমান অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
তাই আপনারা যারা ব্যবসায়ী মশার কয়েল এর ব্যবসা করতে চান তাদের অবশ্যই মশার কয়েল তৈরি উপাদান সম্পর্কে জ্ঞান থাকা অবশ্য। চলনা আমরা জেনে নেই মশার কয়েল তৈরির উপাদান কি কি তার লিস্ট জেনে নেই।
  • পাইরেথ্রিনস
  • অ্যালেথ্রিন
  • পাইপারনিল বাটক্সাইড
  • ম্যাপফ্ লুথ্রিন
  • পাইরেথ্রাম বা পাইরেথ্রয়েডস
  • এমজিকে ২৬৪ এন (অক্টাইল সাইক্লোহপটিন ডিকারবক্সিমাইড)
  • এসবিথোথ্রিন
  • বিএইচট (বাটলেটেড হাইড্রোক্সিটোলিউইন)
  • ডাইমফ্ লুথ্রিন
আরো পড়ুনঃ  ইউনিজাইম সিরাপ খেলে কি মোটা হয় ও ইউনিজাইম সিরাপ এর কাজ কি
তাহলে আশা করছি আপনারা উপরের লিস্টে মশার কয়েল তৈরির উপাদান গুলোর নাম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। তবে আপনারা অনেকেই এই উপাদানগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান। তাই আমরা নিচের অংশে মশার কয়েল তৈরির উপাদান গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

মশার কয়েল তৈরি হয় কি কি দিয়ে

এতক্ষণ পর্যন্ত আমরা জানলাম মশার কয়েল কি কি রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে তৈরি। তবে আপনি যদি মশার কয়েল তৈরি করে ব্যবসা করতে চান তাহলে অবশ্যই মশার কয়েল তৈরি হয় কি কি দিয়ে তা সম্পর্কে অবশ্যই জানা উচিত। চলুন আমরা জেনে নেই মশার কয়েল তৈরি হয় কি দিয়ে তার বর্ণনা সমূহঃ
পাইরেথ্রাম বা পাইরেথ্রয়েডসঃ মশার কয়েল তৈরি করতে প্রথম যে উপাদানটি প্রয়োজন হয় সেটি হল এটি। এটি মূলত চন্দ্রমল্লিকা ফুল থেকে প্রাপ্ত প্রাকৃতিক কীটনাশক। চন্দ্রমল্লিকা ফুল থেকেই বাইরে পাইরেথ্রাম তৈরি হয়। আর পাইরেথ্রয়েডস সাধারণত মশা মাছি ও পোকামাকড়ানোর জন্য মশার কয়েলে ব্যবহার করা হয়।
পাইরেথ্রিনসঃ এর রাসায়নিক দ্রব্যটি মূলত ক্রাইস্যান্থেমাম সিনারেফোলিয়াম থেকে তৈরি করা হয়। মশা মাছি অথবা পোকামাকড়কে আকৃষ্ট করার জন্য এই উপাদানটি মশার কয়েল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাছাড়াও এটি মশা তাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
 
অ্যালেথ্রিনঃ এই রাসায়নিক উপাদানটি হল সর্বপ্রথম সিন্থেটিক পাইরেথ্রয়েড। এটিকে আবার  ডি-ট্রান্স-অ্যালথ্রিন নামেও সবাই জানে। এই রাসায়নিক উপাদানটি প্রধানত কীটনাশক যা মূলত ফসলের ক্ষেতে অথবা খামারে পোকামাকড় তাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই উপাদানটি  ক্রাইস্যান্থেমাম ফুল তৈরি করা হয়। আর এর এ ধরনের বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি মশার কয়েলে রাসায়নিক দ্রব্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
এসবিথোথ্রিনঃ এই উপাদানটিও আগের অ্যালেথ্রিন এর মত সিনথেটি পাইরোয়েড। এই উপাদানটিও মশার কয়েল তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর এটি মশার মারার স্প্রেতে বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে বর্তমানে মশার কয়েলে এটি ব্যবহার করতে দেখা যায়।
বিএইচটি (বাটলেটেড হাইড্রোক্সিটোলিউইন): এটি মশার কয়েল তৈরি করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কারণ আমরা যখন মশার কয়েল জ্বালায় তখন এটি আস্তে আস্তে জ্বলে ধোয়া বের করতে থাকে। মশার কয়েলটি যাতে বায়ুতে অক্সিজেনের সাথে মিশে আগুন তৈরি না করে সেজন্যই উপাদানটি ব্যবহার করা হয়। মূলত মশার কয়েলের যে অংশটি ধীরে ধীরে জ্বলতে থাকে এবং ধোয়া বের করে সেই অংশটি যাতে আগুন না ধরে সেজন্য এটি ব্যবহার করা হয়।
ম্যাপফ্লুথ্রিনঃ এই রাসায়নিক উপাদানটিকে পাইরেথ্রয়েড এস্টার বলা হয়ে থাকে। এটি মশার কয়েল তৈরি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যা ছাড়া মশার কয়েল পরিপূর্ণভাবে তৈরি করা সম্ভব নয়। আবার এই উপাদানটি ব্যবহার না করলে মশার কয়েলটি মানুষের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
পাইপারনিল বাটক্সাইড (পিবিও): মশার কয়েল তৈরি করতে এই রাসায়নিক উপাদানটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। সাধারণত এই উপাদানটি পাইরেথ্রয়েডের কার্যকর ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যা কিনা কয়েল তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ডাইমফ্লুথ্রিনঃ এটি হলো এক প্রকার কীটনাশক। যাকে মূলত পাইরেথ্রয়েড রাসায়নিক কীটনাশক বলা হয়ে থাকে। এটি মশার কয়েল উৎপাদনে অধিক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আর এই উপাদানটি ব্যবহার না করলে মশা কখনোই তাড়ানো যাবে না অর্থাৎ মশার কয়েল ভালো মতো কাজ করবে না।
এমজিকে ২৬৪ এন (অক্টাইল সাইক্লোহপটিন ডিকারবক্সিমাইড)ঃ আপনি যদি মশার কয়েল তৈরি করে ব্যবসা করে সফল হতে চান তাহলে অবশ্যই এই উপাদানটি সম্পর্কে জানা উচিত। কারণ এই উপাদানটি মশার কয়েল তৈরিতে ভালো পরিমান অবদান রয়েছে। এই রাসায়নিক উপাদানটি  ঐচ্ছিক সংযোজক হিসেবে পাইরেথ্রয়েডের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে অর্থাৎ উন্নত করে থাকে। তাহলে বুঝতে পারছেন এই উপাদানটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
বাইন্ডিং এজেন্টঃ এটি মূলত কয়েলের উপাদান গুলোকে একসাথে ধরে রাখতে সহায়তা করে। এর উপাদান গুলোর মধ্যে রয়েছে বাইন্ডারে স্টার্চ, আঠা বা অন্যান্য আঠালো পদার্থ যা মূলত ব্যবহার করা হয়।
দাহ্য সংযোজনঃ এই উপাদানটি কয়েলের দাহ্যতা বাড়াতে সহায়তা করে থাকে।দাহ্য সংযোজন উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয় পটাসিয়াম নাইট্রেট বা সোডিয়াম নাইট্রেট।

সবচেয়ে ভালো মশার কয়েল কোনটি

আপনার অনেকেই জানতে চেয়েছেন সবচেয়ে ভালো মশার কয়েল কোনটি। তবে এটি নির্ভর করে আপনার ব্যবহারের উপর এবং আপনার পরিবেশের উপর। তবে আমার জানামতে সবচেয়ে ভালো মশার কয়েল হলো গুডনাইট অ্যাক্টিভ+ । যা মূলত বর্তমানে বাংলাদেশের অধিক ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি একটি ধোয়াবিহীন মশার কয়েল। যার ফলে সকলে এই কয়েল পছন্দ করে থাকে।
এই কোম্পানিটি দাবি করছে তাদের তৈরিকৃত মশার কয়েল 12 ঘন্টা সুরক্ষা প্রদান করে। এটি মূলত ব্যবহারের উপর নির্ভর করে। আপনি অন্যান্য কয়েল ব্যবহার করে দেখতে পারেন যে কোন কয়েলটি আপনার জন্য ভালো হবে। বাজার থেকে কয়েল কিনে ব্যবহার করে দেখতে পারেন কোনটি আপনার ভালো হবে। তাহলে বুঝতে পারবেন কোন মশার কয়েলটি আপনার জন্য সেরা হবে।

মশার কয়েল দাম

আপনার অনেকেই মশার কয়েলের সঠিক দাম জানেন না। তবে চিন্তার কোন কারণ নেই আমরা এখন মশার কয়েলের দাম সম্পর্কে জানব। আপনি যদি রংধনু ফাইবার মসকুইটো কয়েলটি কিনতে চান তাহলে এটির দাম পড়বে ২৮০ টাকা। আপনি এখানে ২৮০ টাকায় ৪টি কয়েলের প্যাকেট পাচ্ছেন। যাতে 10টি করে মোট 40 টি কয়েল রয়েছে। আপনি এটি অনলাইনে অথবা সুপার শপে পেয়ে যাবেন। এছাড়া অনলাইন থেকে আজকের ডিল ওয়েবসাইট থেকে অর্ডার করতে পারবেন।
Good Knight Xpress 12 HR কয়েলটির দাম ১২০ টাকা। এটি একটি ইন্ডিয়ান কয়েল। আর আপনি যদি ম্যাজিক মশার কয়েল কিনতে চান তাহলে এই কয়েলের এক প্যাকেটের দাম মাত্র ৪৫ টাকা। যা মূলত কম দামের মধ্যে সবচেয়ে সেরা কয়েল। এটি আপনারা অনায়াসে মশা তাড়ানোর জন্য ব্যবহার করতে পারেন।

ইলেকট্রিক মশার কয়েল দাম

ইলেকট্রিক মশার কয়েল দাম আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন। তবে ইলেকট্রিক মশার কয়েল হিসেবে রয়েছে গুডনাইট পাওয়ার চিপ সিস্টেম কয়েল। এই গুড নাইট ওয়ান-টাইম মেশিন কয়েলটি ও চিপ প্যাকের মূল্য ৪৫ টাকা। এছাড়া চায়নার ইলেকট্রিক মশার কয়েল রয়েছে যার দাম ৫৫০ টাকা। এটিতে রয়েছে ৩০টি ট্যাবলেট যা মূলত 12 ঘন্টা করে সার্ভিস দেয়।

শেষ কথা

প্রিয় বন্ধুরা আশা করছি আপনারা মশার কয়েল তৈরির উপাদান সম্পর্কিত সকল কিছু জানতে পেরেছেন। আপনারা যদি এই কয়েল নিয়ে ব্যবসা করতে যান তাহলে অবশ্যই সেটি কি কি উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয় তা সম্পর্কে জানতে হবে এবং ভালোভাবে জ্ঞান রেখে তৈরি করতে হবে। তাই আপনাদের যদি পোস্টটি ভাল লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করুন এবং অন্যজনকে কয়েল তৈরিতে পোস্টটি শেয়ার করুন।

Leave a Comment