অনেকেই আপনারা মোবাইল ফোনে অ্যাপ লক সফটওয়্যার ব্যবহার করতে চান। কিন্তু অনেকেই সঠিক ভাবে জানেন না কোন লক সফটওয়্যার গুলো ভালো।
আপনাদের কথা চিন্তা করেই আমরা সেরা ৫ টি অ্যাপ লক করার সফটওয়্যার সম্পর্কে আলোচনা করব। এই অ্যাপ লক ব্যবহার করে আপনি সহজেই যেকোনো অ্যাপ এর সিকিউরিটি বৃদ্ধি করতে পারবেন।
অনুমতি ছাড়া কেউ আপনার মোবাইলের যেকোনো ধরনের অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবে না বা অন করতে পারবেনা। এবার চলুন অ্যাপ লকগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে আসি।
সেরা ৫টি অ্যাপ লক সফটওয়্যার
বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়।এটি এখন আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের এক বিশাল অংশ। ফোনে থাকে ব্যাংকিং অ্যাপ, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, ছবি, ভিডিও, এমনকি প্রাইভেট নোটও।
কিন্তু আপনি কি জানেন? এক মুহূর্তের জন্য ফোন অন্যের হাতে গেলেই আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
অবশ্যই পড়বেনঃ
এই কারণেই দরকার একটি ভালো App Lock Software যা আপনার গোপন তথ্যকে নিরাপদ রাখবে এবং অননুমোদিত প্রবেশ প্রতিরোধ করবে।
চলুন জেনে নেই ২০২৫ সালের সেরা ১০টি অ্যাপ লক সফটওয়্যার, যেগুলো সহজে ব্যবহারযোগ্য, নিরাপদ এবং সম্পূর্ণ বিশ্বাসযোগ্য।
১. AppLock by DoMobile Lab – অ্যাপ লক ডাউনলোড
এই অ্যাপটি বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও কার্যকর App Lock সফটওয়্যারগুলোর একটি। এটি ব্যবহার করা সহজ এবং অত্যন্ত কাস্টমাইজেবল। আর এই app লক ব্যবহার করে আপনি সকল ধরনের সফটওয়্যার গুলো পাসওয়ার্ড দ্বারা লক করতে পারবেন।
অ্যাপ লক সফটওয়্যার গুলোর মধ্যে এটি খুবই কার্যকরী ভাবে কাজ করে থাকে। বর্তমান সময়ে এই অ্যাপ লকটি অধিক পরিমাণে ব্যবহার হচ্ছে, তার কারণ এই অ্যাপ লক সঠিকভাবে সুরক্ষা প্রদান করে থাকে। পাশাপাশি এই অ্যাপ লকে কিছু কাস্টমাইজেশন ফিচার রয়েছে।
যার সাহায্যে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। এখানে আপনি অ্যাপ লকটিতে বিভিন্ন টাইপের কাস্টমাইজ ব্যাকগ্রাউন্ড সেটাপ করতে পারবেন। মূলত আপনি যখন পাসওয়ার্ড দিয়ে অ্যাপটি খুলবেন, সেই সময়ে ব্যাকগ্রাউন্ড চেঞ্জ করতে পারবেন।
এই অ্যাপটিতে আপনি যে কোন অ্যাপ লক করার পাশাপাশি ফটো ও ফাইল পর্যন্ত প্রাইভেট বা লক করে রাখতে পারবেন। এছাড়াও এই অ্যাপটি ফিঙ্গারপ্রিন্ট সিস্টেম সাপোর্ট করে। অর্থাৎ আপনি ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়েও অ্যাপ ওপেন করতে পারবেন।

আর এই অ্যাপ লকের নিজস্ব প্রাইভেট ব্রাউজার রয়েছে। এর ফলে আপনি নির্দ্বিধায় যে কোন কিছু সার্চ দিয়ে তথ্য Safe রাখতে পারবেন। এই অ্যাপটি ডাউনলোড করার জন্য গুগল প্লে স্টোরে AppLock by DoMobile Lab লিখে সার্চ করুন।
এরপর ইন্সটল করে প্রয়োজনীয় সেটআপ করুন। তবে অবশ্যই অ্যাপ লকে ব্যাকআপ পিন সেটআপ করে রাখবেন।
এতে করে আপনি পাসওয়ার্ড ভুলে গেলেও পরবর্তীতে পাসওয়ার্ড রিকভার করতে পারবেন। অ্যাপটি গুগল প্লে স্টোর থেকে ১০০ মিলিয়ন এর বেশি বার ডাউনলোড হয়েছে। আর অ্যাপের রেটিং ৪.২। অ্যাপটির কিছু বৈশিষ্ট্য হলোঃ
- পিন, প্যাটার্ন বা ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে লক সিস্টেম
- ইনট্রুডার সেলফি: কেউ ভুল পাসওয়ার্ড দিলে তার ছবি তুলে রাখে
- ফটো ও ভিডিও হাইড করার ভল্ট
- অ্যাপ আইকন লুকানোর অপশন, যাতে কেউ বুঝতেও না পারে অ্যাপটি ফোনে আছে
২. LOCKit
LOCKit একটি দারুণ অল-ইন-ওয়ান সিকিউরিটি অ্যাপ। শুধু অ্যাপ লক নয়, এটি গ্যালারি ও ফাইলও সুরক্ষিত রাখে। এছাড়াও অ্যাপটি ফটো ও ভিডিও লক করে থাকে।
অর্থাৎ আপনি এই অ্যাপের মাধ্যমে আপনার প্রাইভেট ভিডিও লক করে রাখতে পারবেন। তাছাড়াও এই অ্যাপ ব্যবহার করে স্ক্রিন লক করা যায় এবং নোটিফিকেশন হাইড করতে পারবেন।
আর এই app lock অ্যাপটিতে স্মার্ট আনলক সিস্টেম রয়েছে। এই সিস্টেমের মাধ্যমে অ্যাপ নির্দিষ্ট Wi-Fi বা অবস্থানে আনলক হয়ে যায়।
৩. Smart AppLock (App Protect)
এই অ্যাপটি শুধু অ্যাপ নয়, আপনার সেটিংস, Wi-Fi, Bluetooth পর্যন্ত লক করতে পারে। এটি বর্তমানের সবচেয়ে হাই সিকিউরিটি অ্যাপ লক।
এই অ্যাপ ব্যবহার করে আপনি সহজেই মোবাইলের যে কোন অ্যাপের সিকিউরিটি বৃদ্ধি করতে পারবেন। আপনার অন্যান্য অ্যাপ সহজে কেউ খুলতে পারবেনা।
আর কেউ খোলার চেষ্টা করলে এই অ্যাপটি সরাসরি তার সেলফি নিয়ে নিবে। এতে করে আপনি বুঝতে পারবেন কে আপনার অ্যাপ লক খোলার চেষ্টা করেছে।
এছাড়াও এই অ্যাপে Fake crash স্ক্রিন ফিচার রয়েছে, অর্থাৎ কেউ আনলক করতে চাইলে মিথ্যা এরর দেখায়। তাছাড়াও ব্যাটারি সেভ হওয়ার ও পারফরম্যান্স বৃদ্ধি করার কিছু ফিচার পাবেন।
এছাড়া আরো অনেক ধরনের ফিচার রয়েছে যা সরাসরি আপনি ডাউনলোড করে বুঝতে পারবেন। অ্যাপটি বর্তমানে গুগল প্লে স্টোরে অ্যাভেলেবল রয়েছে।
সরাসরি গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে স্মার্ট অ্যাপ লক লিখে সার্চ করুন। এরপর আপনার প্রয়োজন মত কাস্টমাইজ যেকোনো অ্যাপ লক করুন। এই অ্যাপ লক সফটওয়্যার ব্যবহার করে খুব সহজেই মোবাইলের যেকোনো অ্যাপ পাসওয়ার্ড প্রটেক্টেড করতে পারবেন।
৪. Norton App Lock – অ্যাপ লক সফটওয়্যার
Norton নামটি অনেকেই চিনেন তাদের অ্যান্টিভাইরাসের জন্য। তাদের App Lock অ্যাপও একসময় খুব জনপ্রিয় ছিল। তবে বর্তমানে এটি খুব একটা জনপ্রিয় নয়।
তবে এর সিকিউরিটি খুব ভালো। আপনি তাদের এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করে যেমন সার্ভিস পেয়েছিলেন। ঠিক একইভাবে তাদের এই অ্যাপ লক ব্যবহার করেও ভালো সার্ভিস পাবেন।
তবে তাদের অ্যাপটি বর্তমানে গুগলের প্লে স্টোরে নেই। এই অ্যাপটি ডাউনলোড করার জন্য গুগল ক্রোম ব্রাউজার ব্যবহার করতে হবে।
গুগল ক্রোম ব্রাউজারে গিয়ে Norton App Lock লিখে সার্চ করবেন। এরপর বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে সহজেই ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। তবে যেহেতু তাদের এই অ্যাপটি আর বর্তমানে চালু নেই।
এর জন্য থার্ড পার্টি ওয়েবসাইট থেকে তাদের অ্যাপ গুলো ডাউনলোড না করাই ভালো। কারণ Norton ব্র্যান্ডের নামই বিশ্বাসের প্রতীক।
তবে বর্তমানে অ্যাপটির আপডেট বন্ধ আছে, তাই পুরনো ভার্সন থাকলে সতর্কভাবে ব্যবহার করা উচিত। আপনি গুগল প্লে স্টোর থেকে উপরে উল্লেখিত অন্যান্য অ্যাপ লকগুলো ডাউনলোড করতে পারেন।
৫. AppLock – Fingerprint by SpSoft
এই অ্যাপটি বিশেষভাবে তৈরি তাদের জন্য যারা ফিঙ্গারপ্রিন্ট সিকিউরিটি চান। এখানে অ্যাপটিতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট, প্যাটার্ন ও পিন তিন ধরনের লক সিস্টেম রয়েছে। তাছাড়াও থিম কাস্টমাইজেশন ও ফটো হাইডার অপশন পাবেন।
যার ফলে আপনি নিজের ইচ্ছামতো ব্যাকগ্রাউন্ড চেঞ্জ করতে পারবেন এবং ফটো হাইড করতে পারবেন। অ্যাপটি গুগল প্লে স্টোরে আছে। এই অ্যাপ গুগল প্লে স্টোর থেকে 50 মিলিয়ন বা ডাউনলোড হয়েছে। আর অ্যাপের রেটিং ৪.৪। দেখে বুঝতে পারলেন এই অ্যাপ লক সফটওয়্যার অনেক জনপ্রিয়।
উপসংহার – অ্যাপ লক সফটওয়্যার
একটি ভালো App Lock Software শুধু আপনার ফোন লক করে না, বরং আপনার ব্যক্তিগত জীবনকেও সুরক্ষিত রাখে।
উপরের অ্যাপগুলো সবই গুগল প্লে স্টোরে সহজে পাওয়া যায় এবং অধিকাংশই ফ্রি।আপনার ব্যবহার ও প্রয়োজন অনুযায়ী যেকোনো একটি বেছে নিন এবং নিশ্চিত থাকুন ।আপনার ফোন এখন সম্পূর্ণ নিরাপদ।

আমি উদ্ভাস আইটির এডমিন, একজন অনলাইন ইনকাম ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক কনটেন্ট ক্রিয়েটর। অনলাইন আয়ের বাস্তব ও কার্যকরী উপায়, প্রযুক্তির আপডেট এবং ডিজিটাল দুনিয়ার নানা দিক নিয়ে আমি নিয়মিত আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। লক্ষ্য একটাই—পাঠকদের জন্য নির্ভরযোগ্য তথ্য তুলে ধরা।